আগামী বছর ৩০ এপ্রিলের মধ্যে নিবন্ধিনহীন কোন সিম থাকলে সংশ্লিষ্ট অপারেটরকে প্রতিটি সিমের জন্য ৫০ ডলার বা প্রায় ৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। একই বিধান ৩ বছর আগে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন তৈরি করলেও এতদিন এর কোন বাস্তবায়ন হয়নি।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম মোবাইল অপারেটরগুলোকে সিম পুনর্নিবন্ধনের জন্য ২০১৬ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে এ বিধান কার্যকরের উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি আগামী এপ্রিলের মধ্যে সিম নিবন্ধন ও পুনর্নিবন্ধন এবং বায়োমেট্রিক পদ্ধতি সম্পন্নের নির্দেশ দিয়েছেন। ওই সময়ের পর অর্থাৎ মে থেকে কোনো অবৈধ সিম পাওয়া গেলে ৫০ ডলার করে জরিমানা দিতে হবে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোকে।
যদিও তারানা হালিমের এই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর সংগঠন অ্যামটব বলেছে, প্রায় ১৩ কোটি সিমের পুনর্নিবন্ধন করতে ৫-৬ মাস সময় লেগে যেতে পারে। এ ছাড়াও রয়েছে বায়োমেট্রিক পদ্ধতির ব্যবহার। পুরো প্রক্রিয়াটিই জটিল এবং সময় সাপেক্ষ। জানা গেছে, অ্যামটব থেকে এ বিষয়ে আরো সময় চাওয়া হতে পারে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারানা হালিম জানিয়েছেন, নিশ্চয় এই কাজের জন্য অনন্তকাল সময় তারা পাবেন না। সবকিছুকে নিয়মের মধ্যে আনতে হবে।
প্রসঙ্গত, অনিবন্ধিত বা অবৈধ সিমের জন্য ২০১২ সালের ১১ অক্টোবরে মোবাইল ফোন অপারেটরদের ৫০ ডলার জরিমানার বিধান করে বিটিআরসি। এরপর তিন বছরেও জরিমানা বা শাস্তির বিধানটি কার্যকর করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। ২০১২ সালের ১১ অক্টোবর থেকে মোবাইল ফোন অপারেটররা প্রি-অ্যাকটিভেটেড সিম বিক্রি করতে পারবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়। বিক্রি করলে প্রতি সিমে ৫০ ডলার করে জরিমানার বিধান করা হয়।
অন্যদিকে, আগামী মাসের ১ তারিখ থেকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে মোবাইল সিম নিবন্ধনে বায়োমেট্রিক পদ্ধতির (আঙুলের ছাপ) ব্যবহার শুরু হচ্ছে। তবে মূল কার্যক্রম শুরু হবে ১৬ ডিসেম্বর থেকে। ফলে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোকে এপ্রিল মাসের মধ্যে সিম নিবন্ধন ও পুনর্নিবন্ধনের কাজ শেষ করতে হবে বলে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বেশ কিছুদিন ধরে দেশে অবৈধ ভিওআইপি (ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল), মোবাইলভিত্তিক অপরাধ, হুমকি-ধমকি, হয়রানিসহ নানা কর্মকা- আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় এসবের কারণ খুঁজতে গিয়ে এ বিষয়ে গঠিত অনুসন্ধান কমিটি অবৈধ এবং অনিবন্ধিত সিম দিয়েই অপকর্মগুলো সংঘটিত হচ্ছে বলে জানতে পারে। আর এসব বন্ধ করতেই সব মোবাইল সিমের নিবন্ধন ও পুনর্নিবন্ধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এসব উদ্যোগ গ্রহণ করার পরও অবৈধ বা অনিবন্ধিত সিম থেকে গেলে সেগুলোকে জরিমানার আওতায় এনে তা বন্ধ করে দেয়া হবে বলে জানা গেছে।
সিম সঠিকভাবে নিবন্ধন না করার পেছনে অপারেটরদের গাফিলতি রয়েছে বলে বরাবরই বলে আসছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। অপারেটররা যথাযথভাবে সিম নিবন্ধন এবং তা পরবর্তীকালে 'ক্রস চেক' করলে সিম সংক্রান্ত এ ধরনের সমস্যা হতো না। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে ২০১২ সালের আগে কেনা সিমের মালিকদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এসএমএস পাঠিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) নাম্বার এবং বাবা ও মায়ের নাম জানতে চাওয়া হবে।