গ্রাফিক্স ডিজাইনার হয়ে আয় করুন মাসিক ৪০,০০০-১,৫০,০০০ টাকা
কাজ যেটাই শিখুন, সবগুলো থেকেই ভালো আয় করা সম্ভব। চাহিদা বিবেচনা করলে আমি ব্যক্তিগতভাবে গ্রাফিক্স ডিজাইনকেই বেছে নেবো। গ্রাফিক্স ডিজাইন এর চাহিদা যেমন আছে তেমনি সম্মানজনক ডেস্কজবও পাওয়া সম্ভব। তাছাড়া দিনদিন এর চাহিদা বেড়েই চলছে। চাহিদার সাথে পাল্লা দিয়ে প্রচুর ডিজাইন ফার্ম তৈরি হচ্ছে সেই সাথে প্রচুর গ্রাফিক্স ডিজাইনারের কর্মসংস্থানও হচ্ছে। এখন প্রায়ই খবরের কাগজে ও অনলাইনে গ্রাফিক্স ডিজাইনার এর জন্যে চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেখা যায়।
গ্রাফিক্স ডিজাইনার কেন হবেন?
>> গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখতে পুর্ব অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নেই। প্রাপ্তবয়স্ক যে কোন মানুষের পক্ষেই শিখা সম্ভব। অনেকেই একটা বিষয় নিয়ে চিন্তিত থাকেন তা হলো কমিউনিকেশন স্কিল, যেটা চাকরির ক্ষেত্রে খুবই অপরিহার্য একটা বিষয়। গ্রাফিক্স ডিজাইনারের খুব বেশি কমিউনিকেশন করার প্রয়োজন হয়না । কোন ধরনের মামা চাচা না থাকলেও চলবে। আর চাকরির জন্য যে ধরনের যোগ্যতার প্রয়োজন তা দরকার নেই। এখানে ক্রিয়েটিভিটিই বেশী প্রাধান্য পায় তাই বাহ্যিক চাকচিক্যের তেমন একটা জরুরত হয় না।
তুলনামূলক স্বল্প সময়েই কাজ শিখা যায় এবং খুব বেশি দক্ষতা না আসলেও কাজ শুরু করে দেয়া যায়। সবশেষে কথা হলো মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরির চেয়ে কোন অংশেই কম না বরং সম্মানজনক ডেস্কজবের নিশ্চয়তা এখানেই বেশি।
গ্রাফিক্স ডিজাইন বলতে কি ধরনের কাজকে বোঝানো হয়?
>>গ্রাফিক্স ডিজাইন বিষয়টা অনেক বিস্তৃত এবং এর অনেক শাখা প্রশাখা আছে। একটা বিষয় সহজ ভাবেই বলা যায় যেখানেই পন্য, সেবা কিংবা প্রচারের বিষয় সেখানেই উপস্থাপনের দরকার হয়, আর উপস্থাপনের জন্য ডিজাইন অপরিহার্য। সাধারনত গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা যে ধরনের কাজ করে থাকেন তার মধ্যে- ইলাস্ট্রেশন, বুক কভার, টাইপোগ্রাফি, ব্রুশিওর, স্টিকার, সিডি কভার, বিজ্ঞাপন, ক্যালেন্ডার, ডিজিটাল সাইন, মডার্ন পেইন্টিং, সফটওয়্যার ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, টেক্সটাইল ডিজাইন, ব্র্যান্ডিং বা লোগো ডিজাইন, ম্যাগাজিন, টেমপ্লেট ডিজাইন ইত্যাদি অন্যতম।
একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার কি পরিমান আয় করতে পারেন?
এইটা কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এক কথায় বলতে গেলে, অসীম! দিবা স্বপ্ন পরেই দেখি, বাস্তবতার সাথে আগে পরিচিত হই। প্রথমে জেনে নিই, গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসাবে আয় করার পথগুলি কি কি?
গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে আপনার সামনে তিনটি উপায়ে আয় করার সুযোগ আছে।
১। চাকরি করে আয় করতে পারেনঃ
>> যেহেতু এই পেশাটি স্কিল নির্ভর তাই অনেকটা দক্ষতা অনুযায়ী আয়ের তারতম্য হতে পারে। তবে একজন প্রতিভাবান দক্ষ গ্রাফিক্স ডিজাইনারের মাসিক বেতন ৪০,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। চাকরি করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা।
২। ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেনঃ
>> বেশিরভাগ গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা ফ্রিল্যান্সিং করতে পছন্দ করেন। ফ্রিল্যান্সিং করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো ১০ টা ৬ টা অফিস করার প্রয়োজন হয়না এবং কাজের স্বাধীনতা আছে। ওডেস্ক, ইল্যান্স, ফ্রিল্যান্সার, ফাইভার, পিপল পার আওয়ার এই রকমের ফ্রিল্যান্সিং সাইট গুলো থেকে কাজ নিয়ে কাজ করতে পারেন।
একজন প্রতিভাবান দক্ষ গ্রাফিক্স ডিজাইনার ফ্রিল্যান্সিং করে প্রতি মাসে ৫০০ ডলার থেকে ২০০০ ডলার কিংবা তারো বেশি আয় করতে পারেন।
৩। বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস গুলোতে প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্টের কাজ করতে পারেনঃ
আপনি ১০ টা ৬ টা জব করা, ক্লায়েন্টের কাজ করা কিংবা কারো উপর নির্ভরশীল হয়ে কাজ করতে পছন্দ করেননা?!
সেক্ষেত্রে আপনার জন্যে প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট এ কাজ করাই পারফেক্ট। বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস যেমন ক্রিয়েটিভ মার্কেট, এনভেটোতে কাজ করেও ভালো আয় করা সম্ভব।
তবে এই মার্কেটপ্লেস গুলোতে যত বেশি কোয়লিটি প্রোডাক্ট তৈরি করতে পারবেন ততই আপনার আয় বাড়তে থাকবে। দক্ষ এবং মার্কেটপ্লেসে কাজ করে অভিজ্ঞ যে কোন গ্রাফিক্স ডিজাইনার মাসে ৫০০ ডলার থেকে ২,০০০ কিংবা তারো বেশি আয় করতে পারেন।
>> প্রশিক্ষণ নিলে সাথে সাথেই আপনি এই পরিমান আয় করতে পারবেন তা নয়, আপনাকে অবশ্যই দক্ষ এবং তার সাথে সাথে অভিজ্ঞ হতে হবে। দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্যে প্রচুর সময় দিতে হয়। সাধারনত ১ থেকে ২ বছর সময় ধৈর্য ধরে চেষ্টা করলে দক্ষ এবং সাথে সাথে অভিজ্ঞ হওয়া সম্ভব। যে কোন কাজেই সফল হওয়ার মূলমন্ত্র হলো অধ্যবসায়। তবে দক্ষতা কিংবা অভিজ্ঞতা ছাড়া আপনি একদমই আয় করতে পারবেন না তাও সত্যি না, একিভাবে ভালো আয় কিংবা সম্মানজনক ডেস্কজব পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই যোগ্য হতে হবে।
সংবাদ ;সংগৃহীত